শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
প্রচ্ছদআন্তর্জাতিকসংবিধান সংশোধনের গণভোটে রায় পেয়েছেন মালিয়ানরা।। শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার চাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের দুঃখ প্রকাশ...

সংবিধান সংশোধনের গণভোটে রায় পেয়েছেন মালিয়ানরা।। শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার চাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের দুঃখ প্রকাশ ।। ১৩ হাজার শান্তিরক্ষী সরাতে বছর গড়িয়ে যাবে-অভিমত নিরাপত্তা বিশ্লেষকের।।

রবিবারের গণভোটে মালিয়ানরা সংবিধান সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছে। ৩০ জুন শান্তিরক্ষী মিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন সমরিক কর্তৃপক্ষ শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার চাইছেন। প্রত্যাহার চাওয়ার ঘটনার যুক্তরাষ্ট্রের দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে মালির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির জোট (সিএসপি-পিএসডি) বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প ছাড়া শান্তি রক্ষীদের প্রস্থান সমগ্র অঞ্চলে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে বলে করছে। ১৩ হাজার শান্তিরক্ষী সৈন্য ও সরঞ্জামের সুশৃঙ্খল প্রস্থানে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগতে পারে বলে অভিমত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের। সুত্র-আল জাজিরার।।

মালিয়ানরা রবিবারের গণভোটে ৯৭ শতাংশ ভোট দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন অনুমোদন করেছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির বামাকোতে শুক্রবার ফলাফল ঘোষণা করার সময় নির্বাচন কমিশনের প্রধান মোস্তাফা সিসে বলেছেন, দেশের ৮.৪ মিলিয়ন নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ভোটদানের হার ছিল মাত্র ৩৯.৪%।

ট্রানজিশনাল কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত নতুন সংবিধানের কিছু প্রস্তাবিত ধারা বিতর্কিত। সংশোধনের পক্ষরা বলছেন, তারা ভঙ্গুর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করবে তবে বিরোধীরা বলছে, রাষ্ট্রপতিকে খুব বেশি ক্ষমতা দেবে।

কিন্তু আঞ্চলিক সংস্থা এবং জাতিসংঘ গণভোটটিকেই দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধরে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখেছে। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন জঙ্গিরা আক্রমণ বাড়াচ্ছে।

উত্তরের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি গণভোট বয়কটের আহ্বান জানিয়েছিল। আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সাথে যুক্ত জঙ্গিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উত্তর মালির বিশাল এলাকায় হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনায় সামান্য ভোটগ্রহণ হয়েছে।

এদিকে মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী “মিনুসমার’ ম্যান্ডেট ৩০শে জুন শেষ হতে যাচ্ছে। তাই ম্যান্ডেট নবায়নের জন্য নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হবার কথা রয়েছে। রেজ্যুলিউশনের পক্ষে অন্তত নয়টি ভোট প্রয়োজন এবং এই রেজ্যুলুশন পাস করাতে পাঁচটি স্থায়ী প্রতিনিধি – রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্সের পক্ষ থেকে কোন ভেটো পড়া যাবে না।

তবে জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্টনিও গুতেরেস সুপারিশ করেছেন যে, মিশনটিকে এমনভাবে সাজাতে হবে যেন এটি সীমিত কয়েকটি বিষয় নিয়ে কাজ করে।

অন্যদিকে মালির অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদৌলায়ে ডিওপ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মালির নিরাপত্তাহীনতা ও সহিংসতা বন্ধ করতে না পারার কারণে শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রত্যাহার চেয়েছেন। শান্তিরক্ষীর ব্যাপারে মালিয়ান জনগণের মধ্য আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মে মাসে কয়েক হাজার মালিয়ানরা বিক্ষোভ করেছে।

এদিকে মালি থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রত্যাহার চাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র দুঃখ প্রকাশ করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটি থেকে “সুশৃঙ্খল এবং দায়িত্বশীল” উপায়ে মিশন কমিয়ে আনা হয়। যেন শান্তিরক্ষী এবং মালিয়ানদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া যায়।”

অন্যদিকে শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য স্থায়ী কৌশলগত কাঠামো (সিএসপি-পিএসডি) নামের মালির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির জোট এক বিবৃতিতে বলেছে, বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প ছাড়াই মিনুসমার প্রস্থান মালি সহ সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে”।

তবে, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, ১৩ হাজার সৈন্য ও সরঞ্জামের সুশৃঙ্খল প্রস্থানে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগতে পারে।

উল্লেখ, ২০১৩ সালে মালিতে জাতিসংঘ মিশন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০৩ জনেরও বেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছে। তাই এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এখানে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশের ১৫শ শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন।####

আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ