মাত্র অতিরিক্ত কাজের চাপ, ঘুমের অভাব সহ বিভিন্ন কারণে যুক্তরাজ্যে ডাক্তারদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষের তুলনার ডাক্তারদের মধ্যে এই আত্মহত্যার সম্ভাবনা ২ থেকে ৫ গুণ বেড়েছে বলে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
অফিস অফ ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্সের সাম্প্রতি এক গবেষণায় জানায় যে, শুধুমাত্র ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যে ৭২জন চিকিৎসা পেশাদার (ডাক্তার, নার্স, ফিজিশিয়ান, ডেন্টিস্ট এবং মিডওয়াইফ সহ) আত্মহত্যা করেছে। যা প্রতি সপ্তাহে একটির বেশি।নার্সদের মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে। ২০২২ সালে ৩৬০ জনেরও বেশি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।
চিকিৎসা সেবার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উচ্চ আত্মহত্যার প্রবনতার কারণ গুলোর মধ্য রয়েছে, মাত্র অতিরিক্ত কাজের চাপ, ঘুমের অভাব, হয়রানি, দুর্বল সহায়তা কাঠামো সহ নানাবিধ মানসিক প্রেসার।
২০১০সালে শুরুদিকে যখন সরকার বলেছিল যে, যুক্তরাজ্যের বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকারী ব্যয় হ্রাস করার প্রয়োজন। তখন স্বাস্থ্যসেবার উপর চাপ বাড়িয়েছে। যার জন্য হাসপাতালগুলিকে ফ্রন্ট-লাইন পরিষেবাগুলি হ্রাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ২০০৯ থেকে ২০১৯পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা প্রতি বছর ২০শতাংশ বেড়েছে। তখন চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করা লোকের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ২২ লাখ থেকে ৪৩ লাখে পৌঁছেছে । তারপরে এসেছিল কোভিড-১৯ মহামারী, তখন স্বল্প তহবিলযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উপর চাপ অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়।
এদিক ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন ইউকে চিকিৎসক আত্মহত্যার ক্রমবর্ধমান হার নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। সংগঠনটি যুক্তরাজ্যে চিকিৎসকদের আত্মহত্যার ক্রমবর্ধমান হারে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে, জনসংখ্যার তুলনায় ডাক্তারদের আত্মহত্যার অসম হারের কথা উল্লেখ করে এর জন্য দায়ী হিসাবে স্বীকৃত কাজের অবস্থা এবং জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল (জিএমসি) রেফারেলগুলিকে দায়ী করেছেন।
দি গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানায়, জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল (জিএমসি) দ্বারা তদন্ত করা যুক্তরাজ্যের তিনজনের মধ্যে প্রায় একজন ডাক্তার তাদের নিজের জীবন নেওয়ার কথা ভাবেন। গত বছরের মার্চে যে ২৯ জন ডাক্তার তাদের তদন্ত করার সময় জানুয়ারী ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০২০এর মধ্যে মারা গেছে। এর মধ্যে পাঁচজন আত্মহত্যা করেছে।
বিশ্বজুড়ে ডাক্তাররা চাপের পরিস্থিতিতে কাজ করে থাকে। প্রায়ই যথেষ্ট চাপের মধ্যে জীবন বা মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেয়। রোগী এবং সামাজিক প্রত্যাশার পরিবর্তনের সাথে, এই চাপগুলি বাড়তে থাকে। কয়েক দশক ধরে, দেখা গেছে যে মানসিক রোগের হার, বিশেষ করে আত্মহত্যা, সাধারণ জনসংখ্যার তুলনায় ডাক্তারদের মধ্যে যথেষ্ট বেশি।####