শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
প্রচ্ছদটায়ার উৎপাদনবাংলাদেশের এক চতুর্থাংশ লোকের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা।। ইনসুলিন ইনজেকশনের পরিবর্তে এখন...

বাংলাদেশের এক চতুর্থাংশ লোকের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা।। ইনসুলিন ইনজেকশনের পরিবর্তে এখন মুখে খাবার ওষুধ আসছে।।

বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার চারভাগের একভাগ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে মনে করা হচ্ছে । তাদের মধ্যে ১৩ ভাগ শনাক্ত হলেও বাকি ১২ ভাগ  এখনো অশনাক্ত রয়েছে। তবে আশার কথা হল, ইনসুলিনের বিকল্প হিসাবে মুখে খাওয়ার ওষুধ অচিরেই বাজারে আসছে।

দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৪ লাখ উল্লেখ্য করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, ‘‘২০১০ সালের এক গবেষণায় বাংলাদেশের ৫৬  ভাগেরও বেশি ডায়বেটিসের রোগীরা মনে করেন, তাদের ডায়াবেটিস নেই৷ কারণ তারা পরীক্ষাও করাননি৷  ২০২১  সালের এপ্রিলে আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে ১০০ জনের মধ্যে ৬২ জন ডায়াবেটিসের রোগী অশনাক্তকৃত৷ ফলে এখন যে দেশের ১৩ ভাগ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলা হচ্ছে, তা তাদের চিকিৎসা নেয়ার ভিত্তিতে৷ কিন্তু অশনাক্তকৃতদের ধরা হলে তা মোট জনসংখ্যার ২৫ ভাগ হবে অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ হবে৷

ডায়াবেটিস রোগীদের বড় একটি অংশ নিয়ম-শৃঙ্খলা মানতে চায় না৷ তারা ভুলেই যান যে তারা ডায়বেটিস রোগী৷ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে হৃদরোগ, কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়া, মুখের ও দাঁতের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হতে পারে৷ চোখ ক্ষতিগ্রন্ত হতে পারে৷ এমনকি পঙ্গুত্ব বরণ করতে পারে বলে চিকিৎসার মনে করছে।

বাংলাদেশে বরাবরই বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়েই বেশি কাজ হয়৷ কিন্তু এখানে এখন শিশুরাও ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত হচ্ছে৷ তাই যেকোনো বয়সের মানুষই এখন আক্রান্ত হতে পারে৷

এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে  ডায়াবেটিসে আক্রান্তের মধ্যে ৬২ শতাংশই রোগটি নিয়ে সচেতন নন৷ আর মাত্র ৩৫ শতাংশ নিয়মিত চিকিৎসা নেন৷ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে আবার উচ্চশিক্ষিত বেশি৷

বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের ওষুধ এবং ইনস্যুলিনের দাম এখনো গরিব ও নিম্নবিত্ত মানুষের নাগালের বাইরে। তবে সচেতনতা ও সুশৃঙ্খল জীবনই ডায়াবেটিস রোগীদের দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন দিতে পারে৷”

অন্যদিক ইনসুলিনের বিকল্প হিসাবে মুখে খাওয়ার ওষুধ তৈরির এক গবেষণায় নেতৃত্বে দিচ্ছেন, সাতক্ষীরা জেলার কলোরায়ার তরুণ গবেষক শাতিল শাহরিয়ার নামে এক বাংলাদেশি বিজ্ঞানী । ডায়াবেটিসের চিকিৎসাসংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার একদল বিজ্ঞানী অনেক দিন থেকেই গ্লুকাগন-লাইক পেপটাইড-১ (জিএলপি-১) নামের একটি হরমোন নিয়ে গবেষণা করছেন।

গবেষক দলটি জিন থেরাপি ও ন্যানোটেকনোলজির সমন্বয়ে ডায়াবেটিসের এমন একটি প্রতিষেধক তৈরি করেছে, যেটা একবার মুখে সেবনে মানুষের শরীরে এক মাসের বেশি সময় ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।

একজন সুস্থ মানুষের রক্তে যেভাবে ইনসুলিন তৈরি হয় এবং কাজ করে, এ ওষুধও একইভাবে ইনসুলিন তৈরি করতে সাহায্য করবে। তখন বারবার ইনসুলিন ইনজেকশন নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

গবেষণায় যে ওষুধটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (এফডিএ) কর্তৃপক্ষ স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের নতুন ফর্মুলেশনের ওষুধটিও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদনের জন্য এএফডিএ-এর কাছে আবেদন করা হয়েছে।আশা করা হচ্ছে কয়েক মাসের মধ্যেই অনুমোদন পাওয়া যাবে । এফডিএ অনুমোদন দিলে মানবদেহে এই ফর্মুলেশনের ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে।

আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ