মাহবুব রশীদ। ।
করোনা ভীতি কাটিয়ে, স্বাভাবিক জীবন যাপনের প্রক্রিয়ায় ফিরে এলে, হয়ত ২০২২ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বজুড়ে পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির ধারা হ্রাস পেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি সম্প্রতি এক রিপোর্টে পাঁচটি কারণে সারাবিশ্বে পণ্যের দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে। তার মধ্য , পণ্যের চাহিদা ও সরবারহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটা, পরিবহন সমস্যা, শ্রমিক ঘাটতি, জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি, চীনের বাজারে অস্থিতিশীলতা কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে অন্যতম বড় কারণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে , ওইসিডিভুক্ত (তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট) দেশগুলোতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জ্বালানির দাম ২০ শতাংশ বাড়িয়েছে।
এছাড়া সাম্প্রতিক বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিকগত নানামুখী উত্তেজনায় জ্বালানি নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এসব করণে তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী অনেক দেশ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার আসংখ্যায় উৎপাদন কমিয়ে রেখেছে।
এদিকে করোনা মহামারীর কালীন সময়ে বিভিন্ন দেশের ভেতরে-বাইরে সড়কপথের সীমান্ত বন্ধ থাকা, আকাশ পথে বিমান চলাচল ব্যাহত হওয়া সহ নৌপরিবহনে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এতে শুধু জাহাজের কনটেইনার ভাড়া ৭/৮গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এবং বন্দরগুলোতে শ্রমিক সংকটের কারণে স্বাভাবিক খালাস প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়। উৎপাদন এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে পণ্যের দামও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
অন্যদিকে, চীনের বাজারে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির কারণে, সেখানে পণ্যের সরবারহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। যদি কখনো চীনের বাজারে আরো অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়, তাহলে এর প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারের উপর পড়বে।
এদিকে বর্তমানে কোভিডের প্রকোপ কমে আসা, লকডাউন ও চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় পণ্য এবং সেবার অতিরিক্ত চাহিদা দেখা দেয়।
এই ব্যাপক চাহিদার সাথে সরবারহ ব্যবস্থা কুলিয়ে উঠতে পারছে না। এতে পণ্যের চাহিদা এবং সরবারহের মধ্যে ব্যাপক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে। মুলত এইসব কারণে পণ্যের ঊর্ধ্বতন ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।