জাপানের অন্যতম শীর্ষ টায়ার নির্মাতা ব্রিজস্টোন অতিরিক্ত ৪২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে আমেরিকায় অ্যারিজোনার মরু এলাকায় গুয়াউলে ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ পুনর্নবীকরণযোগ্য উপকরণ থেকে প্রাকৃতিক রাবারের টেকসই বাণিজ্যিক উৎপাদনের শুরু করার পরিকল্পনার নিয়েছে।
ব্রিজস্টোন আমেরিকাস জানায়, আমেরিকার খরা-কবলিত মরুভূমির দক্ষিণ-পশ্চিমে গুয়াউলকে ২০৩০ সালের দিকে অতিরিক্ত বিনিয়োগ এবং সম্প্রসারণের পরিকল্পনার লক্ষ্য বাণিজ্যিক কারণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতিপূর্বে আণবিক প্রজনন কর্মসূচির অবিরত সম্প্রসারণ একশ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৪২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছে ব্রিজস্টোন। কোম্পানিটি ২৫ হাজার অতিরিক্ত একর পর্যন্ত ক্ষমতা বাড়াতে স্থানীয় মার্কিন কৃষক এবং নেটিভ আমেরিকান উপজাতিদের সাথে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রাকৃতিক রাবারের টেকসই বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে।
পাশাপাশি গুয়াউলে কার্বন কমিয়ে আনা এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ পুনর্নবীকরণযোগ্য উপকরণ থেকে টায়ার তৈরি করার পরিকল্পনার রয়েছে ব্রিজস্টোনের। কোম্পানিটি সক্রিয়ভাবে ক্ষয় হয়ে যাওয়ার ব্যবহারিত টায়ার থেকে বিভিন্ন সামগ্রীর পুনর্ব্যবহারের জন্য গবেষণা করছে এবং অ-প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়ার গবেষণার মধ্য নতুন টায়ারে নবায়নযোগ্য উপকরণ যেমন তেল, সিলিকা এবং ভার্জিন, কার্বন ব্ল্যাক ইত্যাদি রয়েছে।
ব্রিজস্টোন ২০১২ সালে থেকে গুয়াউলে গবেষণা কেন্দ্রটি চালু করে, যখন এটি মেসা, অ্যারিজোনার একটি প্রক্রিয়াকরণ এবং গবেষণা কেন্দ্রে ভিত্তি করে। কোম্পানিটি মেসায় গবেষণা কেন্দ্র এবং অ্যারিজোনার এলয়-এ ২৮১একর গায়ুল খামার পরিচালনা করে। ব্রিজস্টোন ২০১৫ সালে গুয়াউলে থেকে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক রাবার থেকে তৈরি প্রথম টায়ার তৈরির মতো বড় মাইলফলক অর্জন, এবং তার গুয়াউলে আণবিক প্রজনন কর্মসূচির অবিরত সম্প্রসারণ করার মতো বড় মাইলফলক অর্জনের জন্য একশ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
ব্রিজস্টোন ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (জুলাই ২০১৭) এবং ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি (DOE) জয়েন্ট জিনোম ইন্সটিটিউট (সেপ্টেম্বর ২০২১) থেকে সহ গুয়েউল গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য একাধিক মার্কিন সরকারের গবেষণা অনুদানের পেয়েছে ।
ব্রিজস্টোন গ্রুপ বর্তমানে ২৫টি দেশে অবস্থিত ১৭৯টি উৎপাদন সুবিধা পরিচালনা করছে। তারা গ্রাহকদের কাছাকাছি কারখানাগুলি স্থাপন করে, যাতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক গুণমান এবং কার্যকারিতা মান অনুযায়ী পণ্য তৈরি করতে এবং সরবরাহ করতে পারে।
ব্রিজস্টোন গ্রুপ তার মধ্য-দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবসায়িক কৌশলকে একত্রিত করেছে যাতে ২০৫০ এর দিকে, ব্রিজস্টোন একটি টেকসই সামাজিক কোম্পানি হিসাবে সামাজিক মূল্যবোধ এবং গ্রাহক চাহিদা মেটাতে পারে।”
ব্রিজস্টোনের “তৃতীয় ভিত্তি” ২০২০সালে গ্রুপের দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত দৃষ্টিভঙ্গিতে কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্যে স্থায়িত্ব ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। ” ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ পুনর্নবীকরণযোগ্য উপকরণ থেকে টায়ার তৈরি করার পরিকল্পনার রয়েছে ব্রিজস্টোনের।
উল্লখ্য, ব্রিজস্টোন টায়ার কোং লিমিটেডের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৩১ সালে । ১৯৮৮সালে দ্য ফায়ারস্টোন টায়ার অ্যান্ড রাবার কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে বিশ্বের বৃহত্তম টায়ার এবং রাবার কোম্পানিগুলির মধ্যে একটিতে পরিনিত হয়ে উঠে ব্রিজস্টোন।
যাত্রীবাহী গাড়ির জন্য টায়ার উৎপাদন এবং টায়ারের ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা পাশাপাশি জাপানের অটোমোবাইল শিল্পের বৃদ্ধির সাথে-সাথে ব্রিজস্টোন গ্রুপ জাপানের বৃহত্তম টায়ার প্রস্তুতকারক হয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে। কোম্পানিটি বিদেশে, বিশেষ করে এশিয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ভাবে সক্রিয় রয়েছে ব্রিজস্টোন। #####