বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
প্রচ্ছদUncategorizedজ্যামাইকার 'ধানসিঁড়ি' রেস্টুরেন্ট- বাংলা খাবারের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান।

জ্যামাইকার ‘ধানসিঁড়ি’ রেস্টুরেন্ট- বাংলা খাবারের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান।

বাঙালীদের ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবারকে যত্নের সাথে আরও পরিচিত করার প্রয়াসে কাজ করে চলেছে জ্যামাইকার হিলসাইডের স্বনামধন্য ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্টন্টি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার নূর এম মুঈদ টিপু জানান, গ্রামীণ বাংলার খাবারের ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশি কমিউনিটিকে সার্ভ করাই আমার মূল লক্ষ্য।

প্রায় ১১ বছর আগে ২০১৪ সাল থেকে জ্যামাইকার ১৬৯-২৮ হিলসাইড এভিনিউর ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্টটি গড়ে তুলেছেন কুমিল্লার ছেলে টিপু। তবে গত ১০ বছর ইন্ডিয়ান ও চাইনিজ খাবার পরিবেশন করলেও গত বছর থেকে তিনি বাঙালীদের ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবার নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। কারণ বাংলা খাবার পরিবেশনের সাথে তিনি আত্মার সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন পাশাপাশি ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্টটে বাংলা, ইন্ডিয়ান সহ আমেরিকান সব ধরনের খাবারের ক্যাটারিং করা হয়ে থাকে।

বন্ধের দিন বিশেষ করে শনি ও রবিবার অন্যান্য বাংলা খাবারের পাশাপাশি ধানসিঁড়ি মূল আকর্ষণ থাকে চালের গুড়ির রুটি দিয়ে হাঁসের মাংস, মেজবানি গরুর মাংস, গরুর কালা ভুনা, গরুর ভুড়ি। ইদানীং গরুর ভুড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ক্যাটারিং-এ গরুর ভুড়ির চাহিদা বেড়ছে।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং মেজর সাবজেক্ট নিয়ে পড়ার পাশাপাশি চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্সি পড়েছেন টিপু সাহেব। এরপর আমেরিকায় এসে সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্ক থেকে একাউন্টিংএ মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনকারী ধানসিঁড়ির কর্ণধার জানান, বাঙালীদের খাবারের প্রিয় তালিকায় এখনো পান্তা ভাত ও ভর্তা রয়েছে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণে আসা বেশ কিছু ভিআইপি এখানে এসে পান্তা ভাত খেয়েছেন। সেই সাথে শুটকির ভর্তা ও ইলিশ মাছ ভাজা ছিল ম্যানুতে। এছাড়া ধানসিঁড়ির সর্ষে ইলিশ এই এলাকার মানুষ খুবই পছন্দ করে।

এক ছেলে, এক মেয়ে সহ দুই সন্তানের জনক ও ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্ট নিয়ে স্বপ্ন দেখা নূর এম মুঈদ আরো জানান, আমরা ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবারের পাশাপাশি সাধারণ বাংলা খবর রাখি। যেমন মাছ, ছোট মাছ, বড় মাছ, পাঁচমিশালি মাছ সহ সবজি এবং হরেক রকমের ভর্তা রয়েছে। পাশাপাশি কাচ্চি বিরানি, বিফ বিরানি, লেম্প বিরানি, চিকেন বিরানি, রেগুলার তেহেরি, বিফ খিচুড়ি, হার্ড চিকেন সহ চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ান খাওয়ার এখানে পাওয়া যায় পাশাপাশি এইসব খাবারের ক্যাটারিংও হয়।

ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবার প্রমোট করায় ব্যস্ত ধানসিঁড়ির রেগুলার আইটেম না হলেও চিকেন টিক্কা মাসালা, নান, পরোটা, চাপাতি, বিফ কাবাব, চিকেন কাবাব, লেম্প কাবাব সহ কাবাব জাতীয় জনপ্রিয় আইটেম গুলির ক্যাটারিং করা হয়। তবে অনলাইনে আমেরিকান সব ফুড-এর অর্ডার নেওয়া হয়।

জামাইকার ধানসিঁড়ির প্রতিষ্ঠানে ১৪/১৫ জনের কর্মসংস্থান রয়েছে জানিয়ে  প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার বলেন,  আমাদের নিকটতম আত্মীয়রা মিলে আমাদের ফ্যামিলির চারটি বিজনেস রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৭০ থেকে ৮০ জন কর্মীর মধ্যে প্রায় ৫০ জন প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মী রয়েছে। আমাদের ফ্যামিলির বিজনেস গুলোর মধ্যে জেএফকে এয়ারপোর্টের পাশে কাবাব ডাইন, ব্রুকলিনের ডাউন টাউন এলাকায় বোম্বে হাইস এবং ইন্ডিয়ান মাসালা রেস্টুরেন্ট গুলো রয়েছে।

জামাইকায় কয়েক লাখ বাঙালির বসবাসর কথা উল্লেখ করে টিপু বলেন, হিলসাইডেও বাঙালি কমিউনিটির বসবাস  বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এই এলাকায় ১৫টির অধিক রেস্টুরেন্টে সহ বাঙালিদের বিভিন্ন ধরণের শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিউইয়র্কে কুইন্সের জামাইকায় উল্লেখযোগ্য ভাবে বাংলাদেশিদের বসবাস রয়েছে উল্লেখ করে নূর এম মুঈদ টিপু বলেন, এখানকার কমিউনিকেশন খুবই ভালো। তাই বাংলাদেশী মুসলমানদের বসতি বেশি বলে এক মাইলের ভেতরে ১০/১২টির বেশি মসজিদ রয়েছে। পাশাপাশি ছেলে মেয়েদের জন্য আলাদা ৫ থেকে ৭টি মাদ্রাসা, ইসলামিক স্কুলও রয়েছে। তাছাড়া ধানসিঁড়ি সব সময় হালাল মাংস দিয়ে তাদের খাবার পণ্যগুলো তৈরি করে বাঙালি মুসলমানদের খাদ্যে চাহিদা পূরণ করে চলেছে।

নূর এম মুঈদ টিপু জানান, এলাকার বাঙালিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশিরাই প্রমোট করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এর ধারা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।###

 

 

আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ