শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিচট্টগ্রামে ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের মধ্যে বিরোধ।। গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাধাগ্রস্ত হলে ফ্যাসিবাদ...

চট্টগ্রামে ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের মধ্যে বিরোধ।। গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাধাগ্রস্ত হলে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে।।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক নতুন করে আবার আলোচিত হচ্ছে । এই বিরোধ চলমান থাকলে গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনা বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ খুব দ্রুতই সংঘটিত হয়ে ফিরিয়ে আসতে পারে বলে অনেকেই মনে করছে।

পাঁচ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনা ছিল শিক্ষাঙ্গনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং কারো উপর ভিন্ন মত চাপিয়ে না দেওয়া। গত প্রায় দুই মাস ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সহ ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনগুলো বারবার এই বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করে আসছে।

অথচ গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কলেজে আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে ছাত্রশিবিরের হামলায় ছাত্রদলের পাঁচজন কর্মী আহত হয়েছে। যদিও ছাত্রশিবির এই হামলার সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করছে।

২০০১ সালে বিএনপি-জামাতের জোট সরকার গঠনের অনেক আগ থেকে সারা দেশে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক চলমান ছিল। তখন চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজ সহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ছাত্রশিবিরের একক নিয়ন্ত্রণে। এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদল সহ অন্য সব ছাত্র সংগঠনকে শিবির প্রতিপক্ষ মনে করত। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৎকালীন এই দুটি ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন একে অপরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি অবস্থানে ছিল।

যার প্রেক্ষিতে জোট সরকার ক্ষমতা থাকার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল, ছাত্রলীগ সহ বাম সংগঠন গুলোকে সাথে নিয়ে ক্যাম্পাসে শিবির বিরোধী অবস্থান নিয়েছিল। সে জন্য ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সক্রিয় রাজনীতি করতে পারেনি।

বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব ছাত্র সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে সহ অবস্থান করছে। কারো বিরুদ্ধে মত চাপিয়ে না দেওয়া সহ শারীরিক আক্রমণের ঘটনা থেকে বিরত থাকবে বলে বারবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বর্তমানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরালো অবস্থান রয়েছে। বিশেষ করে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে প্রায় সবাইকে মত প্রকাশ করতে দেখা গেছে। দলীয় অন্ধ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনৈতির কুফলে জুলাই-আগস্টে ছাত্রলীগ ব্যাপক নির্যাতন চালিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে রক্তাক্ত করেছে। এবং সেই রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। তাই এই অবস্থায় দোষ যারই হোক না কেন, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা ক্যাম্পাস দখল সহ ভিন্ন মত চাপিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতির পুরোপুরি বিরুদ্ধে অবস্থানে নিয়েছে।

চট্টগ্রাম কলেজের এই হামলার ঘটনা যদি এখানেই শেষ না হয়ে, সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে যদি বিরোধপূর্ণ রেষারেষি চলমান থেকে তবে এই দুই ছাত্র সংগঠনের প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীরা আস্থা হারাবে।

গণঅভ্যুত্থানের নিয়ামক শক্তি ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির যদি পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন অব্যাহত রাখে। তবে ফ্যাসিবাদ বিভিন্ন ব্যানারে দ্রুত সংগঠিত হয়ে মাঠে ফিরে আসবে বলে অনেকে মনে করে।####

আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বশেষ