“জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ঘিরে দেশে যে ভয়াবহ গণহত্য হয়েছে, এতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী বুদ্ধিজীবী কিংবা আওয়ামী সমর্থিত সাংবাদিকদের কেউ এখনো পর্যন্ত নিন্দা কিংবা অনুশোচনা পর্যন্ত করে নাই। বরং তাদের কেউ কেউ ফেইসবুকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিষয়টি আড়াল করতে চাইছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এই গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার চায়”। সাম্প্রতিক টেলিভিশনের এক টকশোতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
শফিকুল আলম আরো জানান, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দল কিংবা দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে ওই দলের সংশ্লিষ্ট নেতারা দলের বাইরে এসেও এইসব অপকর্মের প্রতিবাদ করেন। কারণ তারা দলের চেয়ে দেশকে বড় মনে করেন। গণঅভ্যুত্থানে সংগঠিত গণহত্যার ঘটনার আওয়ামী লীগ সমর্থিত কেউ এখনো আফসোস পর্যন্ত করেনি। অথচ ১৪/১৫ বছরের বাচ্চা-বাচ্চা ছেলে, নারী,পুরুষ ও শিশুদেরকে রাস্তায় পাখির মতো গুলি করা হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে ছব্বির গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে সহিংসতায় সারা দেশে ৯৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৮৬৮ জনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও ১১৮ জন এখনে অজ্ঞাত। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের তথ্য বিশ্লেষণ করে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) তার প্রতিবেদনে এসব তথ্যগুলো তুলে ধরেছে। তবে সংগঠনটি নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করে বলেছে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ জন হবে।
শুধু সাত দিনে (১৮-২০ জুলাই ও ৪-৭ আগস্ট) ৮৫২ জন নিহত হয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট কমপক্ষে ২৯৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৭ শতাংশ (৬৭৯ জন) গুলিতে নিহত হয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৬৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের হাতে ৫১৮ (৭৮%) জন, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৫২ জন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে এইচআরএসএসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।#####