“আপনারা এ কেমন বন্ধু কিংবা ভাই হলেন যে গভীর রাতে বাঁধের গেট খুলে দিতে হবে”? কথাগুলো মুহাম্মদ ফারুকের। বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের নেটিজেনদের ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সেদেশের হিন্দুস্তান টাইমসের এক রিপোর্টে ফারুকের এই উদ্ধৃতি প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য ভারতের ত্রিপুরায় ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।
হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্টে ফারুক প্রশ্ন উপস্থাপন করে আরো বলেন,” রাতে কেন খুলে দেয়া হল বাঁধ? দিনের বেলায় কি সেই কাজ করা যেত না? মানুষ তো মানুষের জন্যে। ৩১ বছর পর এখনই বা কেন খোলা হল”।
বন্যায় বিধ্বস্ত ফারুকের একটি মুরগির খামারের জলমগ্ন হয়ে ভাসছে কয়ক’শ মুরগি। মারা গেছে সেই মুরগী গুলো। ফারুক এই পরিস্থিতির জন্যে ভারতকে দায়ী করেছে বলে রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, উজানের পানি বাংলাদেশে ধেয়ে এসে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না দিয়েই বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে বলে তিনি অভিযোগ করে।
তবে ত্রিপুরায় বাঁধের পানি ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এটি সঠিক নয় বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্তব্য করা হয়।
অন্যদিকে ত্রিপুরায় প্রবল বর্ষণে ও বন্যায় অন্তত ১০ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
অবিরাম বৃষ্টি ও বন্যায় বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম। এইসব এলাকার পাঁচটি বড় নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যায় দেশের ৮ জেলার ৩৫৭টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৪ লাখ পরিবার। মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ লাখ । এখন পর্যন্ত চার জেলায় আট জন নিহত হয়েছে। তার মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, কক্সবাজারের দুজন, ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।###